জনপ্রিয় চাইম ব্যান্ডের ভোকালিস্ট কণ্ঠশিল্পী খালিদ সবাইকে কাঁদিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। তার নিথর দেহ যখন হাসপাতালে পড়ে আছে তখন তার কিশোর সন্তান জুয়াইফা আরিফ যুক্তরাষ্ট্রে নিজের স্কুলে। সেখানে বসেই পান বাবার মৃত্যু সংবাদ। এরপর তিনিও বাবাকে নিয়ে দেন একটি ভিডিও বার্তা।
এদিকে একজন সাংবাদিক ও উপস্থাপকের মাধ্যমে সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভিডিও বার্তা দেন জুয়াইফা আরিফ। সেই ভিডিওতে সদ্য প্রয়াত বাবার জন্য দোয়া চেয়ে বলেছেন, আমার বাবা হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। আপনারা সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। তাকে মাফ করে দিয়েন।
ওই ভিডিও বার্তায় তবে খালিদপুত্র ছিলেন স্বাভাবিক। পিতার মৃত্যুর পর তার এই স্বাভাবিক আচরণ নেটিজেনদের অনেকে ভালো চোখে দেখেননি। কেউ কেউ করেছেন সমালোচনা। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন গায়কের স্ত্রী শামীমা জামান। নিজের ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, আমি আর আমার ছেলে রোবট। আমরা কাঁদব না। তাতে তোদের কীরে সমাজ?
এর আগে তিনি লিখেছিলেন, এই ছেলে ১২ বছর বয়স থেকে নামাজ পড়ে, মাশাআল্লাহ, এই ছেলের গানের গলা থাকা সত্ত্বেও গান না শিখে কোরআন শিখেছে। এই ছেলে বাবাকে নামাজ পড়তে বলতে বলতে হতাশ হয়েছে। সে তার অসুস্থ মায়ের সেবা করেছে ৭ মাস, রাত ৪টা পর্যন্ত বায়েজিদ বোস্তামির মতো দাঁড়িয়ে থেকে। ছেলে তার মায়ের মৃত্যুর অপেক্ষায় একা একটি বাসায় কাটিয়েছে।
এরপর তিনি লেখেন, এই ছেলে তার আল্লাহর হুকুম পালন করতে আমেরিকান মেয়েদের আহ্বান সত্ত্বেও একটা প্রেম করেনি। এই ছেলে তেমন বন্ধু হয় না যখন সে দেখে বন্ধুগুলো গাজা খায়। এই ছেলে প্রতিটি কাজে আগে আল্লাহর বিধান কি জেনে নেয়, আমেরিকার স্কুলের হারাম চিকেন দেখলে না খেয়ে থাকে তবু হারাম পেটে দেয় না, এই ছেলেকে তার বাবার টাকা দিতে হয় না, তার মা তার জন্য যথেষ্ট উপার্জন করে।
তার বাবার চিন্তা এই ছেলেকে নিয়ে নয় যতটা, তার গান আর ভক্ত শিষ্যদের নিয়ে। তাই খুব খেয়াল করে আমার ছেলেকে নিয়ে না জেনে একটা খারাপ কথা উচ্চারণ করলে ওপর আল্লাহ তার বিচার করবেন।
সবশেষে শামীমা লিখেছিলেন, আরিক স্কুল থেকে এসে বুঝতেও পারছে না আসলে কি ঘটে গেছে, ও স্মার্ট তো তাই হঠাৎ করে খ্যাত হয়ে কীভাবে কথা বলবে? যত্তসব। আর সানগ্লাস? উন্নত দেশে কান্না লুকাতেও সানগ্লাস পরে মানুষ। শুধু সাংবাদিক তানভীর তারেকের অনুরোধে ও এই কথাগুলো বলতে রাজি হয়েছে। বড়দের সম্মান করে বলে, নয়তো মিডিয়ায় কথা বলতে বা কাজ করতে ও পছন্দ করে না।
এদিকে গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন খালিদ। সে সময় তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান খালিদ চলে গেছেন, তাকে ফেরানো গেল না কিছুতেই।